মহাসড়কের মাঝখানে বিদ্যুতের খুঁটি
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ভোল্টের উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কয়েকটি বৈদ্যুতিক খুঁটি। নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইলে মহাসড়কের চট্টগ্রামগামী লেনে বৈদ্যুতিক খুঁটি পাশ কাটিয়ে ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন অসংখ্য যানবাহন চলাচল করছে। খুঁটিগুলো সরানোর জন্য ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডকে (ডিপিডিসি) চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু গত সাত মাসেও খুঁটিগুলো অপসারণ করা হয়নি।
খুঁটিগুলো যেমন দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি করেছে, তেমনি যানজটের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিমরাইল ক্যাম্প হাইওয়ে পুলিশের পরিদর্শক মো. শরফুদ্দিন বলেন, মহাসড়কে তিনটি বৈদ্যুতিক খুঁটি আছে। খুঁটিগুলোর কারণে মহাসড়ক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এতে মহাসড়কের ওই অংশে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। দ্রুত খুঁটিগুলো অপসারণ করা না হলে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।
২০২২ সালের জুলাইয়ে ব্যস্ততম ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের মাদানীনগর মাদ্রাসার সামনে থেকে কাঁচপুর সেতু পর্যন্ত উভয় পাশ সম্প্রসারণে ‘কাঁচপুর ইউটার্ন প্রকল্প’ হাতে নেয় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ)। ২২ কোটি টাকার প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি। কিন্তু এখনো অনেক কাজ বাকি। তাই প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত।
এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ নারায়ণগঞ্জ অফিসের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘প্রকল্পের ৭৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বৈদ্যুতিক খুঁটির কারণে দ্রুত কাজ শেষ করা যাচ্ছে না। আমরা বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলো সরিয়ে নিতে ডিপিডিসিকে চিঠি দিয়েছি। তারা এখনো কোনো উদ্যোগ নেয়নি। আগামী জুনের মধ্যে প্রকল্পের বাকি কাজ সম্পন্ন করা হবে।’
এর মধ্যে গত বছরের অক্টোবরে শিমরাইল অংশে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বৈদ্যুতিক খুঁটি অপসারণ না করেই মহাসড়ক সম্প্রসারণ ও পাকা করা হয়। এতে মহাসড়কের প্রশস্ততা বেড়েছে বটে, কিন্তু বৈদ্যুতিক খুঁটির কারণে এর সুফল মিলছে না। প্রতিদিন বৈদ্যুতিক খুঁটির পাশ দিয়ে ১৮টি জেলার শত
ঝুঁকির বিষয়ে কথা হয় নাফ পরিবহনের বাসচালক মো. স্বপনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমরা যারা জানি, তারা সতর্কভাবে এখানে গাড়ি চালাই। কিন্তু দূরদূরান্ত থেকে আসা গাড়ির চালকেরা যাঁরা জানেন না, যেকোনো সময় বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে তাঁদের গাড়ির ধাক্কা লাগতে পারে। এভাবে মহাসড়কে বৈদ্যুতিক খুঁটি থাকা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।’
সরেজমিনে দেখা গেছে, খুঁটিগুলোর জায়গায় গাড়িগুলোকে গতি কমিয়ে পাশ কাটিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। এতে করে শিমরাইলের অংশে প্রতিনিয়ত যানবাহনের জটলা লেগে থাকছে, যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। একইভাবে ডেমরার দিক থেকে আসা গাড়িগুলোও ওই খুঁটির কারণে শিমরাইলে বাধার মুখে পড়ছে। একই অবস্থা দেখা যায় পুষ্টি অয়েল মিলের সামনেও। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে যানবাহন ও পথচারীদের।
মহাসড়ক থেকে খুঁটিগুলো কেন সরানো হচ্ছে না, এমন প্রশ্ন ডিপিডিসি সিদ্ধিরগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল ইসলাম জানান, সওজ থেকে খুঁটিগুলো সরানোর বিষয়ে তাঁদের কাছে কয়েকজন এসেছিলেন। তাঁদের প্রধান কার্যালয়ে চিঠি দিতে বলা হয়েছে। তাঁরা চিঠি দিলে সেগুলো সরাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মতামত দিন