নারায়াণগঞ্জ

গাজী টায়ার্স কারখানার মিললো খুলি-হাড়

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে গাজী টায়ার কারখানার পুড়ে যাওয়া ভবনের ভেতর থেকে মাথার খুলি ও হাড়ের টুকরো পেয়েছে বলে দাবি করেছেন নিখোঁজের স্বজনরা।  

 রবিবার  (১ সেপ্টেম্বর) দিনব্যাপী রূপসী এলাকায় কারখানার ভেতরে প্রত্যক্ষদর্শী ও স্বজনদের নিয়ে অনুষ্ঠিত গণশুনানি শেষে ক্ষুব্ধ স্বজনরা কারখানা ভবনের ভেতরে প্রবেশ করে এসব উদ্ধার করে । এর আগে গণশুনানিতে ৭৮ জনের তালিকা করেছে  জেলা প্রশাসনের ৮ সদস্যের তদন্ত কমিটি।

এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির প্রধান ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হামিদুর রহমান বলেন, মাথার খুলি সহ বেশ কিছু হাঁড়ের টুকরো পেয়েছে নিখোঁজের স্বজনরা। তবে এগুলো নিখোঁজদের শরীরের অংশ কিনা তা নিশ্চিত করে এখনি বলা সম্ভব নয়। ডিএনএ টেস্ট করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে ঠিক কতগুলো হাঁড়ের টুকরো পাওয়া গেছে তা জানা নেই। এগুলো পুলিশের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, এছাড়া গণশুনাণি হয়েছে। সেখানে কারখানার লোকজন ও নিখোঁজের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে নানা তথ্য সংগ্রহ করেছি। স্বজনদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী নিখোঁজ ৭৮ জনের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া এই ঘটনায় এর আগে শিক্ষার্থী ও উপজেলা প্রশাসন সহ বিভিন্ন সংস্থার তৈরি করা তালিকা যাচাই বাছাই করে পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করা হবে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গণশুনানি শেষে ক্ষুব্ধ স্বজনরা ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে প্রবেশ করে। এ সময় তারা ভবনটির তৃতীয় তলা পর্যন্ত উঠে যায়। সেখানে পুড়ে যাওয়া মাথার খুলি ও বেশ কিছু হাড়ের টুকরো পেয়েছেন বলে দাবি করেন। পরে জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধায়নের সেসব টুকরো পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে স্বজনরা।

স্বজন জাকির হোসেন এক টুকরো হাড় নিয়ে বলেন, এগুলো সব নিহতদের হাড়। পুড়ে গেলেও শরীরের বিভিন্ন অংশের হাড় ভবনের মেঝেতে পড়ে আছে। আমার ভাই মনির হোসেন এই ভবনের পুড়ে মারা গেছে বলে তিনি দাবি করেন। 

একইভাবে আরও বেশ কয়েকজন নিখোঁজের স্বজনরা এসব হাড়ের টুকরো ও খুলি নিয়ে পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটির কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে টুকরোগুলো পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। 

এর আগে, গত রবিবার (২৫ আগস্ট) রাত সাড়ে ১০ টায় রূপগঞ্জের রূপসীতে গাজী টায়ার কারখানায় আগুন লাগে। পরে দীর্ঘ ২১ ঘন্টা পর সোমবার সন্ধ্যা ৭ টা ৫ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। মঙ্গলবার ভোর ৫ টায় আগুন নেভানোর কথা জানালেও বিকেল থেকে ফের ভবনটিতে আগুন জ্বলে ওঠে৷ পরে দফায় দফায় বিভিন্ন সময় আগুন জ্বলে উঠতে দেখা যায়। এই ঘটনায় ভবনের নিচের বেসমেন্টে তল্লাশি চালিয়ে কিছু পাওয়া যায়নি বলে ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছেন। আর ভবনের চতুর্থ, পঞ্চম ও ছষ্ঠ তলার ফ্লোর ধসে পড়ায় তা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। এই অবস্থায় উদ্ধার অভিযান সম্ভব নয় বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। 

এই ঘটনায় স্বজনদের দাবি অনুযায়ী ১৭৪ জন নিখোঁজের তালিকা করে ফায়ার সার্ভিস। পরে নিখোঁজের তালিকা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হলে শিক্ষার্থীরা ফের নতুন করে ১২১ জনের তালিকা করেছে। পরে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কন্ট্রোল রুম করা হয়। সেখানে নামের তালিকা যাচাই বাছাই করে একটি তালিকা করা হবে বলে জানিয়েছেন। 

মতামত দিন

বিজ্ঞপ্তি
সবার আগে সব খবর পেতে ভিজিট করুন - voiceofnarayanganj.com I যে কোন সংবাদ বা বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন - 01963958226 / 01819136738 অথবা মেইল করুন - voiceofnarayanganj24@gmail.com