নারায়ণগঞ্জে এসে তোপের মুখে নৌপরিবহন উপদেষ্টা
নারায়ণগঞ্জে বিআইডব্লিউটিএ’র কাজ পরিদর্শনে এসে পরিবেশবাদীদের তোপের মুখে পড়েছেন বস্ত্র ও পাট এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) বিকেলে শহরের ৩ নম্বর মাছঘাট এলাকায় বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে বিআইডব্লিউটিএ’র নদী বন্দরের মাল্টিপল জেটি ও আধুনিক লঞ্চঘাট নির্মাণ প্রকল্পের কাজ পরিদর্শনকালে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় দুপক্ষের মধ্যে তর্ক-বিতর্কের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
এ বিষয়টি শীতলক্ষ্যার পাড়ের গাছ রক্ষায় নারায়ণগঞ্জবাসী সংগঠনের সমন্বয়ক ও কবি আরিফ বুলবুল বলেন, নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্য নদীর তীরে বিআইডব্লিউটি’এর প্রজেক্ট তিনি পরিদর্শন করতে এসেছেন। সেই প্রকল্পের কারণে অনেক গাছ কর্তন সহ নদীর প্রবাহ রোধ করা হয়েছে। এ নিয়ে আমরা উপদেষ্টার সাথে কথা বলতে গেলে তিনি প্রথমে আমাদের বুঝতে পারেনি। এ কারণে তার সাথে শুরুতে তর্ক বিতর্কের ঘটনা ঘটে। পরে অবশ্য এ নিয়ে কথা হয়েছে। আমাদের দাবিগুলোর তিন পৃষ্টার কাগজ দিয়েছি। মূলত আমাদের দাবি ছিল এই প্রকল্পের ক্ষতিকর দিকগুলো সংশোধন করে নেওয়ার জন্য। তবে সে বিষয়ে তেমন কোন সুরাহা হয়নি। ফলে অচিরেই আমরা তার সাথে আবার সাক্ষাৎ করবো। তবে নদী দূষণ ও দখল নিয়ে তিনি নানা উদ্যোগ গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন। সেসব উদ্যোগের সাথে তিনি আমাদের থাকতে বলেছেন।
পরে পরিদর্শন শেষে বস্ত্র ও পাট এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন উপদেষ্টা বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জে এক সময় পাটের ব্যবসা ছিল। এটাকে প্রাচ্যের ডান্ডি বলা হতো। এখন পাট না থাকলেও নানা ধরনের ব্যবসা হচ্ছে। এখানে বিশ্ব ব্যাংকের প্রজেক্টে একটি নতুন টার্মিনাল ভবন হচ্ছে। আমি এখানে এসে না দেখলে এই টার্মিনাল ভবনটি সময়মতো ঠিকঠাকমতো উঠবে না। অলরেডি আমরা পিছিয়ে আছি। এই কাজে যদি বাধা আসে তাহলে তো আর এ কাজ হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘নদীর এখন এমন এমন জায়গা দখল করেছে, যেখানে চারতলা-পাঁচতলা-ছয়তলা-সাততলা ভবন করে ফেলেছে। এখন এইটাতে হাত দিতে গেলে আবার আপনারা পেছনে পড়বেন। মুশকিল তো এইখানে। আমরা ন্যায্য কাজ করতে গেলেও বাধা আসে। নদী দূষণ ও দখলরোধে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বিতভাবে কাজ করবেন বলেও জানান তিনি।’
ভারত রাষ্ট্র প্রসঙ্গে সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘তারা যদি আমাদের পায়ে পড়ে ঝগড়া করতে চায়, তাহলে আমরা তো সবসময় চুপ থাকবো না। আমাদের মিডিয়াও চুপ থাকবে না। এইটা কি ভালো লক্ষণ? ভালো লক্ষণ না। আমি মনে করি, ভারতের সাথে যে সম্পর্ক আছে সেইটা নষ্ট হলে ভারতের ক্ষতি হবে, আমাদের না।’’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান আরিফ আহমেদ মোস্তফা, পুলিশ সুপার (এসপি) প্রত্যুষ কুমার মজুমদার, বিআইডব্লিউটিএর পরিচালক আরিফ উদ্দিনসহ নৌ পরিবহন ও শ্রম এবং কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
মতামত দিন