বখাটের কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গৃহবধূকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা
রূপগঞ্জে মনির (৩৫) নামে এক মাদক সেবী বখাটে যুবকের কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় মনিকা পারভিন (৪৫) নামে এক নারীকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ উঠে। এ ঘটনায় পুলিশ ওই যুবককে আটকের পরে ছেড়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সোমবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী মনিকা পারভিন জানান, বিয়ের পর তিনি রূপগঞ্জের তারাবো এলাকায় স্বামীর বাড়িতে বসবাস করেন। বর্তমানে তার স্বামী মাসুদ খান ও বড় ছেলে মান্নান শুভ জীবিকার তাগিদে সৌদি আরবে গেছেন। তিনি ছোট দুই ছেলে সিয়াম (১৬) ও সিহাদকে (১৪) নিয়ে রূপগঞ্জের স্বামীর বাড়িতে বসবাস করেন। কিন্তু স্বামী-সন্তান প্রবাসে থাকার সুযোগে এলাকার চিহ্নিত মাদকসেবী ও মাদক কারবারি মনির তাকে একা পেলে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করতো এবং কুপ্রস্তাব দিত।
সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে রাস্তায় একা পেয়ে বখাটে মনির আবারও ওই প্রবাসীর স্ত্রীকে কুপ্রস্তাব দেয়। তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে গৃহবধূকে হত্যা করতে ধাওয়া করে।
এসময় জীবন বাঁচাতে দৌড়ে বাড়ি এসে ঘরের দরজা বন্ধ করে দিলে মাদক কারবারি মনির ঘরের দরজা-জানালায় ধারাল দা দিয়ে কোপাতে থাকে। এসময় উপায় না পেয়ে তিনি জরুরি সেবা ৯৯৯ এ ফোন দেন। ফোন পেয়ে রূপগঞ্জ থানা থেকে এএসআই মোহাম্মদ ইমরান ও কনস্টেবল মো. রিয়াদ ঘটনাস্থলে এসে এ ঘটনার সত্যতা পান। তবে তারা মাদক কারবারির বাড়ি গিয়ে আটকের পর মোটা অংকের টাকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দিয়ে পুলিশ ফিরে যায়।
বিষয়টি রূপগঞ্জ থানার ওসি লিয়াকত আলীকে জানালে তিনি এসআই মমিনুর রহমানকে পাঠান বিষয়টি তদন্ত করতে। তিনি এসে জানতে পারেন আগের দুই পুলিশ সদস্য ঘুষ পেয়ে ওসিকে জানিয়েছেন মাদক কারবারি মনিরের মানসিক সমস্যা আছে। সে কারণে বিভিন্ন সময়ে অনেককে মারধর করে। সে আসলে মানসিক রোগী। এ কারণে তাকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যাননি।
পরে ওই গৃহবধূ থানায় মামলা করতে গেলে ওসি মামলা না নিয়ে একটি লিখিত অভিযোগ গ্রহণ করেছেন। অভিযোগটি তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছেন রূপগঞ্জ থানার এসআই আবুল কালাম আজাদ।
থানায় অভিযোগ করায় ওই বখাটে এখন নিজেকে বিএনপির কর্মী পরিচয় দিয়ে ছুরি নিয়ে ওই গৃহবধূকে হত্যার জন্য প্রকাশ্যে ঘোরাঘুরি করছে। শুধু তাই নয়, গৃহবধূর দুই ছেলেকেও অপহরণ করার হুমকি দিয়েছে বখাটে মনির।
সন্ত্রাসী মনির প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে ঘুরলেও তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আবুল কালাম আজাদ বলছেন আসামিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
এদিকে, প্রাণনাশের আশঙ্কায় স্বামীর বাড়ি ছেড়ে সোনারগাঁয়ে বাবার বাড়ি গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ। সোমবার সেখানেই তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।
এ বিষয়ে জানতে রূপগঞ্জ থানার ওসি লিয়াকত হোসেনকে একাধিকবার কল করলেও তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ করেননি।
মতামত দিন