অনলাইনে পাবেন বাণিজ্য মেলার টিকিট, নেই ভোগান্তি
শীত উপেক্ষা করে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৯তম আসর জমতে শুরু করেছে। ১ জানুয়ারি থেকে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার পূর্বাচল উপ-শহরের ৪ নম্বর সেক্টরে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে বাণিজ্য মেলা শুরু হয়েছে। মেলায় ক্রেতার সংখ্যা কম থাকলেও দর্শনার্থীরা ভিড় করছেন। তবে মেলায় প্রবেশ করতে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের অনলাইনে টিকিট কেটে প্রবেশ করতে হচ্ছে।
জানা গেছে, বিভিন্ন ক্যাটাগরির ৩৬২টি প্যাভিলিয়ন, স্টল ও রেস্তোরাঁ আছে এবারের মেলায়। বাংলাদেশ ব্যতীত ৭টি দেশের মোট ১১টি প্রতিষ্ঠান এবারের মেলায় অংশ নিচ্ছে। অংশগ্রহণকারী দেশগুলো হলো- ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, হংকং ও মালয়েশিয়া।
এক্সিবিশন সেন্টারের দক্ষিণ-পূর্ব পাশে জুলাই চত্বর, দক্ষিণ-পশ্চিম পাশে কালচারাল সেন্টার, প্রযুক্তি কর্নার ও বিনোদন কর্নার রয়েছে। সেন্টারের উত্তর-পূর্ব পাশে শিশুপার্ক এবং উত্তর-পশ্চিম পাশে ছত্রিশ চত্বর ও নামাজঘর স্থাপন করা হয়েছে।
তবে এবারের মেলায় প্রবশে করতে অনলাইনে টিকিট কাটতে হবে। এতে করে দীর্ঘ লাইনে দাড়িয়ে কালক্ষেপন করার মত বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছেনা।
ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা ২০২৫ এর এক্সিবিশন সেন্টারে বড়দের জন্য প্রবেশ ফি জনপ্রতি ৫০ টাকা ও শিশুদের জন্য ২৫ টাকা। ছুটির দিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা ও অন্যান্য দিনে সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে বাণিজ্যমেলা।
অনলাইনে যেভাবে বাণিজ্য মেলার টিকিট কাটবেন
ঘরে বসে মুহূর্তেই বাণিজ্যমেলার টিকিট কাটতে পারবেন মেলায় যেতে আগ্রহী দর্শনার্থীরা । এজন্য ভিজিট করুন ditf2025.com এই লিঙ্কে। এই লিঙ্কে প্রবেশ করার পর প্রাপ্ত বয়স্ক ও শিশুদের টিকিট বুকিংয়ের আলাদা অপশন রয়েছে। সেখানে বয়সসীমা লেখার পর কয়টি টিকিট কিনতে চান তা লিখতে হবে। একজন সর্বোচ্চ ১০টি টিকিট কিনতে পারবে। ২ বছর থেকে ১২ বছর পর্যন্ত শিশু হিসেবে প্রতি টিকিট ২৫ টাকার সাথে চার্জ হিসেবে আরও ১ টাকা ২৫ পয়সা যুক্ত হবে এবং ১২ বছরের ঊর্ধ্বে সকলে প্রাপ্ত বয়ষ্ক হিসেবে প্রতি টিকিট ৫০ টাকার সাথে চার্জ হিসেবে আরও ২ টাকা ৫০ পয়সা যুক্ত হবে।
এরপর নিচে মোবাইল নম্বর দেবেন। এর পাশে ইমেইল এড্রেস দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। আপনি ইমেইল এড্রেস দিলে টিকিট সংক্রান্ত তথ্য আপনার মেইলে পৌছে যাবে। সবশেষে টিকিটের টাকার পরিমাণ দেখে নিচে ক্লিক বাটনে প্রেস করে ডিজিই পে মাধ্যমে মোবাইল ব্যাংকিং থেকে বিকাশে, নগদ, ইউপে, সেলফিন, মেঘনা পে ব্যবহার করে করে টাকা পরিশোধ করে টিকিট কিনতে পারবেন। এছাড়া ভিসা/ মাস্টার কার্ড ও আইবিবিএল কার্ড ব্যবহার করে টাকা দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। নেট ব্যাংকিং সুবিধায় পূবালী ব্যাংক ও ইসলামিক ব্যাংক থেকে টাকা পরিশোধ করতে পারেন। বাংলা কিউআর কোড ব্যবহার করে টাকা পরিশোধ করতে পারবেন। পরবর্তীতে বাণিজ্য মেলার গেইটে সেই টিকিটের কপি থেকে কোড স্ক্যান করে প্রবেশ করতে পারবেন।
এছাড়া বাণিজ্য মেলার প্রবেশ গেটে বেশ কয়েকটি টিকিট বুথ রয়েছে। সেখানে গেলে খুব সহজে ই-টিকিট সংগ্রহ করতে পারবেন। পরে সেই কিউআর কোড স্ক্যান করার মাধ্যমে মেলায় প্রবেশ করতে পারবেন।
ব্যবসায়ী জাভেদ মিয়ার তার স্ত্রী-সন্তান নিয়ে মেলায় ঘুরতে এসেছেন। তিনি বলেন, এই প্রথম অনলাইনে টিকিট কেটে মেলায় প্রবেশ করতে হচ্ছে। তবে অনলাইনে খুব একটা দক্ষতা নেই; যেকারণে আমি অনলাইনে টিকিট কাটতে পারিনি। তবে মেলার গেইটে কাউন্টার থেকে টিকিট কেটেছি। পরে কিউআর কোড স্ক্যান করে মেলায় প্রবেশ করেছি।
রাজধানীর উত্তরা থেকে মেলায় বন্ধুদের নিয়ে ঘুরতে এসেছেন শিক্ষার্থী আরফান হোসেন। তিনি বলেন, অনলাইনে টিকিট কাটার বিষয়টি খুব ভালো লেগেছে। এতে করে দীর্ঘ সময় ধরে লাইনে দাড়িয়ে থাকার বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে না। আমরা তিন বন্ধু মিলে মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেছি।
এ বিষয়ে বাণিজ্য মেলার পরিচালক বিবেক সরকার বলেন, অনলাইনের টিকিট কাটার সুবিধা এবার প্রথম করা হয়েছে। যার ফলে দীর্ঘ সময় ধরে লাইনে দাড়িয়ে টিকিট কাটার কোন বিড়ম্বনা থাকবেনা। অনলাইনে টিকিট কেটে কিউ আর কোর্ড পাস করে মেলায় দর্শনার্থীরা প্রবেশ করতে পারবেন। ডিজিই-পে অ্যাপ ব্যবহার করে এই টিকিট কালেক্ট করা যায়। তবে যদি কেউ অনলাইনে টিকিট সংগ্রহ করতে না পারে সেক্ষেত্রে মেলার গেটে কাউন্টার রয়েছে। সেখান থেকে অনলাইনে টিকিটের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়।
মতামত দিন