তরুণদের ভাষা বুঝতে ব্যর্থ হলে আওয়ামী লীগের মত পরিণতি হবে : হাসনাত
তরুণ প্রজন্মের ভাষা বুঝতে ব্যর্থ হলে আওয়ামী লীগের মত পরবর্তীতে নীতিনির্ধারকদের পরিণতি হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়া শহীদ মিনারে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের দাবিতে এক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আওয়ামী লীগের সর্বপ্রথম তাদের বিচার হতে হবে। যেসব টকশোজীবী, মিডিয়াপাড়া, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবীরা আওয়ামী লীগের মানবাধিকারের জন্য সরব হয়েছেন, তারা ফ্যাসিবাদের তেল, নুন, ঘি খেয়ে এতোদিন ফ্যাসিবাদের পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন। ফ্যাসিবাদের পক্ষে যেসব কলমগুলো লিখবে আমরা সেই কলমগুলো ভেঙে দিবো, যেসব মিডিয়া কথা বলবে সেসব মিডিয়ার বিপক্ষে আমাদের অবস্থান থাকবে। ফ্যাসিবাদের পক্ষে যেসব মগজ তাদের চিন্তা প্রসারিত করবে তাদের চিন্তার বিপক্ষে আমাদের শক্ত অবস্থান থাকবে।আপনারা যদি তরুণ প্রজন্মের ভাষা বুঝতে ব্যর্থ হন আওয়ামী লীগের যে পরিণতি হয়েছে পরবর্তীতে যারা নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে আসবে তাদেরও একই পরিণতি হবে।
আওয়ামী লীগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হবে কিনা সেটার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ৫ আগস্ট হয়ে গেছে।সেই সিদ্ধান্ত নতুন করে নেওয়ার কিছুই নাই।এই বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের রাজনীতি পুর্নবাসিত হবে কিনা সেটা এখন প্রাসঙ্গিক আলাপ নয়। ওয়ার্ড থেকে শুরু করে কেন্দ্র পর্যন্ত আওয়ামী লীগের প্রত্যেকটা নেতাকর্মীকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। তাদের বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আবার যারা তাদেরকে পুনর্বাসনের কথা বলবে, আওয়ামী লীগের উপস্থিতি ছাড়া নির্বাচন পার্টিসিপেটরি হবে না। এসব কথা যারা বলবে আমরা ধরে নিবো গত ১৬ বছর আওয়ামী লীগের জাহিলিয়াতের রাজনীতি কায়েমে তাদেরও ইন্ধন ছিল।
এই ছাত্র নেতা বলেন, বিপ্লবের দালিলিখ স্বীকৃতির জন্য আজকে বিপ্লবীদের রাস্তায় রাস্তায় পথসভা করতে হচ্ছে। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের পরিণতি নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল। আওয়ামী লীগের শাসন নিষিদ্ধ হবে কিনা সেটি চূড়ান্ত হয়েগিয়েছিল ৫ আগস্ট। তবে অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় আজকে বিপ্লবীরা এই বিপ্লবের লিখিত দালিলিক স্বীকৃতির জন্য যেখানে অপেক্ষা করছে, অন্যদিকে আজকে রাষ্ট্রযন্ত্র এই আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের জন্য বিভিন্নভাবে তারা প্রস্তুতি নিচ্ছে।
তরুণদের মাইসান করার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের পরবর্তী বাংলাদেশ বিনির্মান হবে অতীত সময়ে যারা রাজনীতি করেছে তাদের অভিজ্ঞতা ও তরুণ প্রজন্মের ভয়ভীন মনোভাব-এই দুটোর সংমিশ্রণে। কিন্তু এখানে যদি তরুণদের মাইনাস করার কোন ধরনের চিন্তা থাকে, গণঅভ্যুত্থানের একক এজেন্ডার প্রবণতা আমরা দেখতে পাচ্ছি।
তরুণদের অর্জনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদেরকে রক্ত দিতে হয়েছে, ভয়কে জয় করতে হয়েছে। কারণ আমাদের যে দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতি ও প্রতিহিংসার রাজনীতির সংস্কৃতি, তা আমাদের তরুণদেরকে আশাহত করেছে। আমরা জনকল্যাণমূলক কাজ করতে পারি নাই। আমরা রাষ্ট্রের মধ্যে নাগরিক হয়ে উঠতে পারি নাই। আমাদের অতিতের যে রাজনৈতিক কাঠামো রয়েছে সেটা আমাদের নাগরিক অধিকার থেকে ইতিহাসের স্তরে স্তরে বঞ্চিত করেছে। এই বঞ্চিতের ক্ষোভ থেকে ক্ষোভের আগুন দিয়ে আমরা ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ গড়েছি।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে শহরের চাষাঢ়া এলাকা থেকে মিশনপাড়া পর্যন্ত লিফলেট বিতরণ করে গণসংযোগ করেন। পরে সেখান থেকে গাড়ি যোগে সিদ্ধিরগঞ্জ ও সোনারগাঁয়ের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুলাহ আল আমিন, যুগ্ম আহবায়ক আলী আহসান জোনায়েদ সহ মুখপাত্র আরেফীন মুহাম্মদ হিজবুল্লাহ, কেন্দ্রীয় সদস্য শওকত আলী, তামিম আহমেদ সহ প্রমুখ।
মতামত দিন