অর্থ পাচারের অভিযোগে শামীম ওসমান পরিবারের বিরুদ্ধে মামলা
প্রায় ২০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান, তার স্ত্রী সালমা ওসমান ও শ্যালক তানভীর আহমেদকে আসামি করে মামলা দায়েরের অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।বুধবার (১৫ জানুয়ারি) বিকালে এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন। তিনি বলেন, কে টেলিকমিউনিকেশন্স লিমিটেডের মাধ্যমে তারা এই অর্থ বিদেশে পাচার করেছেন। আগামীকালের মধ্যেই মামলাটি দায়ের করা হবে বলে জানান তিনি।
দুদক মহাপরিচালক আক্তার হোসেন বলেন, অনুসন্ধানের সময় বিটিআরসি থেকে পাওয়া রেকর্ডপত্র ও তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনায় দেখা যায়, কে টেলিকমিউনিকেশন্স লিমিটেড আন্তর্জাতিক কিংবা বৈদেশিক ইনকামিং কল আনা তথা সেবা রফতানির জন্য বিটিআরসি থেকে ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে (আইজিডব্লিউ) লাইসেন্সপ্রাপ্ত একটি প্রতিষ্ঠান। যার চেয়ারম্যান সালমা ওসমান এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর আহমেদ।
আক্তার হোসেন আরও জানান, দুদকের অনুসন্ধানের সময় ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে বা আইজিডব্লিউ অপারেটরকে টেলিকমিউনিকেশন্স লিমিটেডের আন্তর্জাতিক ইনকামিং কল আনয়ন কিংবা সেবা রফতানি এবং তার সংশ্লেষে মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা বাংলাদেশে আনার ক্ষেত্রে দেখা যায়, আইজিডব্লিউ অপারেট ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে ৯১ কোটি ৫০ লাখ ৯২ হাজার ৮৬৫ কল মিনিট সেবা রফতানি করে। রফতানি করা এ সেবার মূল্য ২ কোটি ৭৪ লাখ ৫২ হাজার ৭৮৬ মার্কিন ডলার। উক্ত বৈদেশিক মুদ্রা আইন অনুযায়ী ফরেন রেমিট্যান্স হিসেবে বাংলাদেশে নিয়ে আসার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ জন্য নারায়ণগঞ্জের আইএফআইসি ব্যাংকের শাখা থেকে পাঠানো উক্ত আইজিডব্লিউ প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্ট নম্বরের বিবরণীতে দেখা যায়, ২ কোটি ৭৪ লাখ ৫২ হাজার ৭৮৬ মার্কিন ডলারের স্থলে ২২ লাখ ৬৯ হাজার ৪২৭ মার্কিন ডলার আনা হয়েছে। আনা হয়নি ২ কোটি ৫১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৫৮ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৯৩ কোটি ৯১ লাখ ১৮ হাজার ৬০৩ টাকা। তাছাড়া বিটিআরসি থেকেও এ সংক্রান্তে অনুরূপ তথ্য পাওয়া যায়। এ সময়ে আইজিডব্লিউ অপারেটরের চেয়ারম্যান হিসেবে সালমা ওসমান এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে তানভীর আহমেদ দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
দুদকের এই কর্মকর্তা আরও জানান, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক এমপি শামীম ওসমানের সহযোগিতায় চেয়ারম্যান হিসেবে সালমা ওসমান এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে তানভীর আহমেদ দায়িত্বে থাকা অবস্থায় উল্লিখিত আইজিডব্লিউ প্রতিষ্ঠান রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের স্বার্থ থাকা সত্ত্বেও বিদ্যমান মানি লন্ডারিং আইন অমান্য করে ১৯৩ কোটি ৯১ লাখ ১৮ হাজার ৬০৩ টাকা মূল্যের ২ কোটি ৫১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৫৮ মার্কিন ডলার পাচার কিংবা মানি লন্ডারিং করা হয়েছে। এক্ষেত্রে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় পাচারের অপরাধ হয়েছে।
মতামত দিন